Wednesday, August 19, 2009

পাশ্চাত্যের মানুষ পুনরায় চারিত্রিক পবিত্রতার দিকে ঝুঁকছে

এক. মানুষ প্রকৃতিগতভাবেই সততা ও চারিত্রিক পবিত্রতাকে পছন্দ করে। অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, মানুষ যতই নৈতিক মূল্যবোধগুলোর প্রতি আগ্রহী হয়, ততই তাদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি পায়। পাশ্চাত্যে দীর্ঘকাল ধরে নৈতিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় সেখানকার নারী, পুরুষ, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তার অপূরণীয় ক্ষতি করেছে। এ অবস্থায় সেখানকার নতুন প্রজন্মের কন্যা ও মেয়েরা পুনরায় চারিত্রিক পবিত্রতার দিকে ঝুঁকছে। তারা এখন অশ্লীলতা, ব্যাভিচার ও বিভিন্ন যৌন অনাচারের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবার জন্য আকুল হয়ে উঠেছে। পাশ্চাত্যের নতুন প্রজন্ম, বিশেষ নারী সমাজের একটা অংশসহ তরুণী ও যুবতীদের একটা বড় অংশ স্বাধীনতার নামে যৌন অনাচার ও অশ্লীলতা প্রসারের প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গির কঠোর বিরোধিতা করছে। যদিও পাশ্চাত্যের প্রচারমাধ্যমগুলো এ ধরনের তথ্য প্রচার করছে না, বরং বিপরীত তথ্যই প্রচার করছে। আই জি নামের নিউইয়র্ক-ভিত্তিক একটি জরীপ ও গবেষণা-প্রতিষ্ঠানের রিপোর্টে বলা হয়েছে, নিউইয়র্কের নতুন প্রজন্মের মেয়েরা তাদের আগের প্রজন্মগুলোর পছন্দের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছেন। অর্থাৎ সেখানকার এই প্রজন্মের মেয়েরা নিজেদের প্রদর্শন করে বেড়াতে এবং শরীরকে ফুটিয়ে তোলার জন্য ব্যবহৃত পোশাক-পরিচ্ছদ পরতে মোটেই আগ্রহী নয়। পাশ্চাত্যের নতুন প্রজন্ম, বিশেষ নারী সমাজের একটা অংশসহ তরুণী ও যুবতীদের একটা বড় অংশ স্বাধীনতার নামে যৌন অনাচার ও অশ্লীলতা প্রসারের প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গির কঠোর বিরোধিতা করছে। বরং তারা আধ্যাত্মিক ও আত্মিক চাহিদাগুলোর প্রতি বেশী গুরুত্ব দেয়ার দাবী জানাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে মার্কিন লেখিকা ওয়েন্ডি শালিত বলেছেন, আমরা সাংস্কৃতিক দিক থেকে এক স্পর্শকাতর সময়ের সম্মুখীন। পাশ্চাত্যে এখন ক্ষতিকারক সংগীত, বিভিন্ন ধরনের উস্কানীমূলক তৎপরতা, পরিবার ব্যবস্থায় ধ্বস, বিবাহ-বিচ্ছেদ, মাদকাসক্তি ও আদর্শিক অচলাবস্থা নারী ও কন্যাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। বর্তমান প্রজন্মের যুবতী ও কন্যারা অতীতের প্রজন্মের চেয়ে ভিন্ন ধরনের। তারা অবাধ বা লাগামহীন স্বাধীনতায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে, বরং তারা পুনরায় মানুষের প্রকৃতিগত সৎ-স্বভাব বা সতীত্বের মাধুর্য আস্বাদন করতে চাইছে। মার্কিন লেখিকা ওয়েন্ডি শালিত আরো বলেছেন, পাশ্চাত্যের বর্তমান প্রজন্মের যুবতী ও কন্যারা তাদের বাবা মায়েদের মত হাল্কা জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হতে চাইছে না। তারা তাদের পোশাকেও পরিবর্তন আনতে চাইছে। বরং তারা সংযম ও বিচক্ষণতা অবলম্বন করে সতীত্বকে যথাসম্ভব বজায় রাখার চেষ্টা করছে। মিসেস রাচেল এ প্রসঙ্গে বলেছেন, প্রথম দিকে আমি সতীত্বের গুরুত্বের ব্যাপারে সন্দিহান ছিলাম। কিন্তু সতীত্ব সম্পর্কে মার্কিন লেখিকা ওয়েন্ডি শালিতের বই পড়ে এখন আমার চোখ খুলে গেছে। আমি এখন বুঝতে পেরেছি যে সঠিক পথ কোনটি। মহান প্রভুকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যে আমি সময়মত এ বই পেয়েছি। আমি এখন সতীত্ব বজায় রাখার জন্য নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করছি এবং আমার মধ্যে জন্ম নিয়েছে আত্ম-বিশ্বাস। পাশ্চাত্যের অনেক মানুষ এখন যৌন অনাচার ও ব্যাভিচারের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০০৪ সালে পরিচালিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সেখানকার যুব প্রজন্মের যেসব সদস্য অবৈধ যৌন সম্পর্কে জড়িত হয়েছে তাদের দুই তৃতীয়াংশই এখন অনুতপ্ত। ২০০৫ সালে পরিচালিত অন্য এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিয়ের আগে যারা যৌন সম্পর্কে জড়িত হয়েছে এবং যারা মদ ও মাদক সেবনে অভ্যস্ত হয়েছে তারা যৌবনের এই সোনালী বয়সেই বিষন্নতা ও হতাশা বা নৈরাশ্যের শিকার। বিষন্নতার কারণে অনেক যুবতী শারীরীকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এ ধরনের যুবতী ও তরুনীরা এখন সতীত্ব বজায় রাখতে না পারার জন্য অনুশোচনা করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানাপলিস অঙ্গরাজ্যের ১৬ বছরের যুবতী লরেন অত্যন্ত কৃতী ছাত্রী হিসেবে পরিচিত। সে এখন নাইট-ক্লাবের বিভিন্ন পার্টির প্রতি বিতৃষ্ণ। তার মতে চিত্ত-বিনোদনের নামে সমবয়সী ছেলে বন্ধুদের সাথে রাত না কাটিয়ে মেয়েদের উচিত সমবয়সী মেয়েদের সাথেই অবসর-বিনোদনকে গুরুত্ব দেয়া । ২০০৬ সালে জগবি নামের খ্যাতনামা জরীপ সংস্থার এক জরীপে বলা হয়েছে, মার্কিন হাইস্কুলগুলোর দুই তৃতীয়াংশ ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের আচরণের ওপর বাবা-মায়ের নিয়ন্ত্রণ বা নজরদারী রাখাকে জরুরী বলে মনে করছে। তারা চায় বাবা-মায়েরা তাদেরকে খারাপ স্থানে বা ক্ষতিকারক আড্ডায় যেতে নিরুৎসাহিত করুক। পাশ্চাত্যের কোনো কোনো স্থানের যুবক-যুবতীরা এখন ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে সংযমী হবার প্রশিক্ষণে অংশ নিচ্ছে। এ ধরনের প্রশিক্ষণ ক্লাসে তারা তাদের সম্ভাব্য সমস্যা ও সেগুলোর সমাধান নিয়ে আলোচনা বা পরামর্শ করার সুযোগ পাচ্ছে। পাশ্চাত্যের অনেক যুবক-যুবতী এখন যৌন অনাচার ও ব্যাভিচারের বিস্তারের অন্যতম প্রভাবক বা চালিকা-শক্তি হিসেবে ব্যবহৃত অশ্লীল ছায়াছবি, নাটক ও ম্যাগাজিনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। তাদের অনেকেই এখন লেখক লেখিকাদেরকে তাদের গল্প বা চিত্র-নাট্য থেকে যৌন-সম্পর্ক বিষয়ক বক্তব্য বা দৃশ্যগুলো বাদ দেয়ার অনুরোধ করছে। তাদের অনেকেই এখন এসব অশ্লীল বিষয়কে বস্তাপচা বিষয় বলে মনে করছে এবং তারা বলছে, আমরা নতুন অথচ ভালো কিছু চাই। আজকের এই আলোচনা শেষ করবো টেইলর ম্যুর নামের ১৮ বছর বয়স্ক এক মার্কিন যুবতীর বক্তব্য উদ্ধৃত কোরে। সংযম বিষয়ক প্রশিক্ষণ ক্লাসে অংশ গ্রহণকারী এই যুবতী তার সমবয়সী নতুন প্রজন্মের মেয়েদের উদ্দেশ্যে বলছেন, বন্ধুরা, সংযম খুবই ভালো কাজ। আমি অত্যন্ত গর্বের সাথে বলতে চাই যে আমি চারিত্রিক পবিত্রতা বা সতীত্ব বজায় রেখেছি। আসুন আমরা সবাই মূল্যবোধের প্রতি অবিচল থাকি। যৌন প্রবৃত্তিকে কেবল পরিবার গঠন ও মানুষের বংশ বিস্তার অব্যাহত রাখার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। সতীত্ব বা চারিত্রিক পবিত্রতা বজায় রাখা হলে মানুষের সত্তার সম্মান সব সময় বজায় থাকবে। দুই. মানুষ প্রকৃতিগতভাবেই সততা ও চারিত্রিক পবিত্রতাকে পছন্দ করে। মানুষ যতই নৈতিক মূল্যবোধগুলোর মেনে চলে, ততই তাদের নিরাপত্তা বাড়ে। পাশ্চাত্যে দীর্ঘকাল ধরে নৈতিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় সেখানকার নারী, পুরুষ, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তার অপূরণীয় ক্ষতি করেছে। এ অবস্থায় কন্যা ও মেয়েরাসহ সেখানকার নতুন প্রজন্মের অনেকেই পুনরায় চারিত্রিক পবিত্রতা এবং আধ্যাত্মিকতার দিকে ঝুঁকছে। পাশ্চাত্যের নতুন প্রজন্ম, বিশেষ নারী সমাজের একটা অংশসহ তরুণী ও যুবতীদের একটা বড় অংশ স্বাধীনতার নামে যৌন অনাচার ও অশ্লীলতা প্রসারের প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গির কঠোর বিরোধিতা করছে। যদিও পাশ্চাত্যের প্রচারমাধ্যমগুলো এ ধরনের তথ্য গোপন রেখে বিপরীত তথ্যই প্রচার করছে। আই জি নামের নিউইয়র্ক-ভিত্তিক একটি জরীপ ও গবেষণা-প্রতিষ্ঠানের রিপোর্টে বলা হয়েছে, নিউইয়র্কের নতুন প্রজন্মের মেয়েরা নিজেদের প্রদর্শন করে বেড়াতে এবং শরীরকে ফুটিয়ে তোলার জন্য ব্যবহৃত টাইট পোশাক-পরিচ্ছদ পরতে মোটেই আগ্রহী নয়। আই জি প্রতিষ্ঠানের গবেষক মিলিসা লাভিজেন তার প্রতিষ্ঠানের পরিসংখ্যান ভিত্তিক এই রিপোর্ট বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেছেন, নিউইয়র্কের নতুন প্রজন্মের মেয়েরা নিজেদের শরীর আগের চেয়েও বিস্তৃতভাবে ঢেকে রাখতে বা পোশাকে আবৃত করতে পছন্দ করছে। লাভিজেন আরো বলেছেন, আমাদের বিশ্বাস নিউইয়র্কের নতুন প্রজন্মের মেয়েদের এই পরিবর্তিত আচরণের মূল কারণ হল, লাগামহীন জীবন-যাত্রার প্রতি স্বাভাবিক দৃষ্টিভঙ্গি। উল্লেখ্য, "সব কিছুই অস্থায়ী"-এই শ্লোগানের ভিত্তিতে শুরু হয়েছিল লাগামহীন জীবন-যাত্রা। বর্তমানে এরই প্রতিক্রিয়া হিসেবে তরুণী ও যুবতীরা নিজেদের দেহ অতীত প্রজন্মের চেয়ে অনেক বেশী ঢেকে রাখছে বা পোশাকে আবৃত করছে। মিসেস লাভিজেনের মতে, পাশ্চাত্যে কয়েক দশক ধরে অশালীন বা অর্ধনগ্ন পোশাকের সংস্কৃতির আধিপত্যের পর এখন সেখানকার মানুষ আরো ভালো ও উন্নত পোশাক অনুসন্ধান করছেন। আই জি প্রতিষ্ঠানের গবেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রজন্মের মেয়েরা অন্য যে কারনে তাদের আগের প্রজন্মগুলোর পছন্দের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছেন তা হল, বর্তমান পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটানোর আকাঙ্ক্ষা এবং আরো বেশী নিরাপত্তার প্রত্যাশা। এই গবেষকরা বলছেন, ধর্মের প্রতি আগ্রহ, গীর্যায় যাওয়া, লাগামহীন জীবন-যাত্রার গণ-সংস্কৃতির মোকাবেলা- এসব থেকে বোঝা যায় যুব-প্রজন্ম বর্তমান পরিস্থিতি বা পরিবেশের ওপর আরো ভালো নিয়ন্ত্রণ রাখতে চান। পাশ্চাত্যের অনেক যুবতী বা তরুণীর মধ্যে এই শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে যে, শালীন পোশাক ব্যক্তি ও সমাজের পবিত্রতা এবং সুস্থতার জন্য অপরিহার্য্য। যে পরিবেশে নারী ও কণ্যারা শালীনতার সীমা লংঘনে অভ্যস্ত নয়, সেখানে সহজেই সামাজিক ও অর্থনৈতিক তৎপরতা চালানো যায় বলে তারা বুঝতে পেরেছে। প্যানসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কল্ওয়ি হার্লি ২০০৬ সালের শরৎকালে আনুষ্ঠানিক পোশাকের পরিবর্তে যেমন-খুশি-তেমন পোশাক পরে ক্লাসে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিত হবার প্রতিবাদ জানান। তিনি কর্মস্থলে ও ক্লাসে আনুষ্ঠানিক শালীন পোশাক পরার প্রথা পুনরায় চালু করার আহ্বান জানিয়ে এক খোলা চিঠিতে বলেন, "শিক্ষার্থীদের পোশাক কি এমন হওয়া উচিত নয় যে তা থেকে পড়াশুনার প্রতি তাদের আন্তরিকতা বা আগ্রহ ফুটে উঠবে? আমার মতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক পোশাক শিক্ষক, সহপাঠি এবং সর্বোপরি নিজের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের নিদর্শন। শিক্ষার্থী যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক ও শালীন পোশাক পরে ক্লাসে উপস্থিত হয়, তখন তা এ অর্থ বহন করে যে সে এই শিক্ষা-বৈঠকের অন্য সদস্যদের সম্মান জানাচ্ছে এবং এ ধরনের বৈঠকে সে সবচেয়ে ভালো পন্থায় উপস্থিত থাকার অঙ্গীকার করছে।" পাশ্চাত্যের কোনো কোনো তরুণী ও যুবতী অশালীন পোশাকের ব্যাপারে পোশাক-ব্যবসায়ী বা পোশাক মার্কেটের কর্মকর্তা, গণমাধ্যম ও পত্র-পত্রিকায় প্রতিবাদ-লিপি পাঠাচ্ছেন। এই তরুণী ও যুবতীরা শরীর-প্রদর্শনীমূলক বা অশালীন পোশাক পরতে রাজী নন। এল্লা গান্ডারসন ওয়াশিংটনের সিয়াটল শহরের বাসিন্দা। ১৭ বছর বয়স্ক এই তরুণী সম্পতি আরো সংযত বা শালীন পোশাক সরবরাহ করতে নর্ডস্টর্ম নামের একটি পোশাক বিক্রয় কেন্দ্রে চিঠি লিখেছেন। তার ঐ চিঠি মার্কিন গণমাধ্যমগুলোতে গুরুত্বের সাথে প্রকাশিত হয়েছে এবং এর ফলে পোশাকের মডেল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আবারও বিতর্ক জোরদার হয়ে উঠেছে। ঐ চিঠির একাংশে এল্লা গান্ডারসন বলেছেন, "নর্ডস্টর্মের সম্মানিত পরিচালক, আমি আপনার বিক্রয়-কেন্দ্রে এসেছিলাম পোশাক কিনতে। কিন্তু এখানে সব পোশাকই ছিল সংকীর্ণ ও শরীরকে দৃষ্টিকটুভাবে ফুটিয়ে তোলার পোশাক। আপনার বিক্রেতারা জানালেন, আমাদের কাছে কেবল এই এক ডিজাইনের পোশাক রয়েছে। যদি এ কথা সত্য হয়, তাহলে তো আমি বা অন্য যে কোনো মেয়েকে অর্ধনগ্ন পোশাক পরেই সড়গুলোতে চলা-ফেরা করতে হবে। আমার মতে, এ ধরনের প্রবণতা বা দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার। " কয়েকমাস পর নর্ডস্টর্মের একজন প্রতিনিধি এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে বলে এল্লাকে নিশ্চয়তা দেন। অশালীন পোশাকের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যের নতুন প্রজন্মের প্রতিবাদের মুখে কোনো কোনো পশ্চিমা বিক্রেতা কাঙ্ক্ষিত শালীন পোশাকের প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন। এ ধরনের শালীন পোশাক প্রদর্শনীর ধারণা চালু হয় ১৯৯৯ সালে। সে সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একদল মা তাদের মেয়েদের দিয়ে এ ধরনের প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। এই মেয়েরা ছিল একটি ধর্মীয় গ্রুপের সদস্য। ২০০৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেয়েদের অংশগ্রহণে দেশটির ১৭ টি শহরে এ ধরনের শালীন পোশাকের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। সিয়াটলের ১৮ বছর বয়স্ক যুবতী রবিন মনে করেন, অশালীন পোশাক অন্যদেরকে এই পোশাকধারী সম্পর্কে বাস্তব ও মানবীয় মূল্যবোধের পরিবর্তে তার বাহ্যিক দিকের আলোকে বিচারের আহ্বান জানায়; আর এ বিষয়টি সমাজে নারীর মূল্যকে কমিয়ে দেয়। এভাবে দেখা যাচ্ছ পাশ্চাত্যের নারী সমাজের নতুন প্রজন্ম ধীরে ধীর শালীন পোশাক সম্পর্কে পশ্চিমা সমাজে একটা শক্ত অবস্থানের ভিত্তি গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। তাই দেখা যাচ্ছে ম্যাগীর মত ৩৩ বছর বয়স্ক মার্কিন মহিলা সতীত্বের বা চারিত্রিক পবিত্রতার শিল্প শীর্ষক বই লিখে নারীর সম্মান বৃদ্ধির জন্য তাদেরকে শালীন ও সম্মানজনক পোশাক পরার এবং পরপুরুষদের আকৃষ্ট করার জন্য সাজ-সজ্জা না করতে নারীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন, যাতে পুরুষরা মানুষ হিসেবে নারীকে সম্মান জানায়। পাশ্চাত্যের অনেক যুবক-যুবতী এখন যৌন অনাচার ও ব্যাভিচারের বিস্তারের অন্যতম প্রভাবক বা চালিকা-শক্তি হিসেবে ব্যবহৃত অশ্লীল ছায়াছবি, কুরুচিপূর্ণ সঙ্গীত, নাটক ও ম্যাগাজিনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। ২০০৫ সালের জুলাই মাসে লন্ডনে কয়েকজন তরুণী অশ্লীল ছবি প্রকাশের জন্য কয়েকটি ম্যাগাজিনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে ধর্মঘট পালন করে। পাশ্চাত্যের অনেক যুবক-যুবতী এখন নৈতিক সংযমের প্রশিক্ষণ-ক্লাসে অংশ নিচ্ছেন। এটা খুবই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি যে, যেসব সমাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ ও বাবা-মায়েরা নিজ সন্তানদেরকে চারিত্রিক পবিত্রতার পথ থেকে দূরে থাকতে উৎসাহ দিয়েছেন সেসব সমাজেরই যুব প্রজন্মের একাংশ উন্নত আদর্শের পথ খুঁজে নেয়ার চেষ্টা করছেন। সাহসী এই যুব প্রজন্ম অন্যদের গভীরভাবে প্রভাবিত করছেন। নৈতিক সংযমের প্রশিক্ষণ-ক্লাসে অংশগ্রহণকারী রশীদা জলি'র মত ২৯ বছর বয়স্ক মার্কিন যুবতীর ভাষায় এই নতুন ধারা থেকে বোঝা যায়, সাহসী যুব-প্রজন্ম ইচ্ছে করলে প্রচলিত বা প্রতিষ্ঠিত নেতিবাচক ধারার বিপরীত স্রোতে এগিয়ে যেতে পারে এবং এভাবে তারা এক ইতিবাচক উত্তরাধিকার রেখে যেতে পারে। এটা স্পষ্ট পাশ্চাত্যের অনেক মানুষ ও বিশেষ করে যুব প্রজন্মের একাংশ পুনরায় চারিত্রিক পবিত্রতার দিকে ঝুঁকছে, যদিও এ ধারার প্রতি সমর্থন এখনও ব্যাপক বা নিরংকুশ নয়, কিন্তু পশ্চিমা সমাজের নৈতিক সংকটসহ নানা সামাজিক সংকটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে সফল হয়েছেন। *

No comments: