Monday, May 28, 2012

পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তনের চেষ্টা : মধ্যপ্রাচ্যে বিভেদ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র

দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ায় অবস্থিত পারস্য উপসাগর হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীনতম সভ্যতাগুলোর একটির লালনক্ষেত্র। মানবজাতির লিখিত ইতিহাসের প্রথম থেকেই বিশ্বের চারটি সনাক্তকৃত সাগরের মধ্যে পারস্য উপসাগর ছিল অন্যতম। কিন্তু বর্তমানে কয়েকটি পশ্চিমা দেশের ইন্ধনে আরব দেশগুলোর বই-পুস্তক এবং সংবাদ ও প্রতিবেদন থেকে পারস্য উপসাগরের নাম মুছে ফেলা হয়েছে। পাশ্চাত্যের গণমাধ্যমেও পারস্য উপসাগরের পরিবর্তে ‘আরব উপসাগর’ নামটি চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সম্প্রতি এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, "এ উপসাগরের নাম থেকে 'পারস্য' শব্দটি উঠিয়ে দেয়ার অর্থ হচ্ছে ইরানি জনগণের আবেগ-অনুভূতি নিয়ে খেলা করা। এ ছাড়া, এর ফলে একটি ঐতিহাসিক বাস্তবতাকেও অস্বীকার করা হচ্ছে।" এ নিবন্ধে আমরা পারস্য উপসাগরে নিয়ে ইরান ও কয়েকটি আরব দেশের দ্বন্দ্ব এবং এর প্রভাব নিয়ে আলোচনার প্রয়াস পাবো। পারস্য উপসাগরের অবস্থান পারস্য উপসাগর দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ায় অবস্থিত। এ উপসাগরটির সুবিস্তৃত উত্তরাঞ্চলীয় উপকূল ইরানের অংশ। এর পশ্চিমে রয়েছে ইরাক ও কুয়েত, দক্ষিণে রয়েছে সৌদি আরব, কাতার, বাহরাইন, ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। পারস্য উপসাগরের মোট আয়তন দুই লাখ ৪০ হাজার বর্গকিলোমিটার। এ উপসাগর লম্বায় ৯০০ কিলোমিটার এবং চওড়ায় প্রায় ২৪০ কিলোমিটার। ইরান সংলগ্ন পারস্য উপসাগরীয় উপকূলের দৈর্ঘ্য ৮০০ কিলোমিটার। পারস্য উপসাগরের গভীরতা কম এবং সাধারণত: তা ৫০ মিটার, আর সর্বোচ্চ গভীরতা প্রায় ১০০ মিটার। পারস্য উপসাগর হরমুজ-প্রণালীর মাধ্যমে ওমান সাগর ও মুক্ত মহাসাগরের সাথে যুক্ত হয়েছে। ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক গুরুত্ব পারস্য উপসাগরের প্রাকৃতিক প্রতিবেশ অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী। বর্তমানে বিশ্ব রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও পারস্য উপসাগর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এর কারণ হচ্ছে- পারস্য উপসাগর বিশ্বের অন্যতম প্রধান গুরুত্বপূর্ণ জলপথ। এ উপসাগর কৌশলগত দিক থেকেও বিশ্বের অত্যন্ত স্পর্শকাতর অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় পরাশক্তিগুলো সব সময়ই এ জলপথে তাদের উপস্থিতি জোরদারের প্রচেষ্টা চালিয়ে এসেছে। খার্গ, আবু মুসা, বড় তুন্ব, ছোট তুন্ব, কিশ, কেশম ও লাভান পারস্য উপসাগরে অবস্থিত ইরানের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বীপ। পারস্য উপসাগরের গুরুত্বের কারণেই এখানকার হরমুজ-প্রণালী বিশ্বের অন্যতম প্রধান গুরুত্বপূর্ণ প্রণালী হিসেবে বিবেচিত হয়। এ প্রণালী লম্বায় ১৫৮ কিলোমিটার এবং চওড়ায় ৫৬ থেকে ১৮০ কিলোমিটার। আন্তর্জাতিক নৌ-পরিবহনের সংখ্যার দিক থেকে হরমুজ প্রণালীর স্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। প্রতিদিন প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল বয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এ প্রণালী দিয়ে। বিশ্বের অপরিশোধিত জ্বালানি তেলবাহী তেল ট্যাংকারগুলোর শতকরা ৪০ ভাগ যাতায়াত করে এ সাগর দিয়ে এবং এ জলপথ দিয়েই রপ্তানি করা হয় বিশ্ববাজারের শতকরা প্রায় ২৫ ভাগ জ্বালানি তেল। পারস্য উপসাগরের ব্যাপক গুরুত্ব তুলে ধরার জন্য এটাই জানা যথেষ্ট যে, বিশ্বে এ পর্যন্ত আবিস্কৃত জ্বালানি তেল ও গ্যাসের শতকরা প্রায় ৬৮ ভাগই রয়েছে এ উপসাগরের নিচে ও আশপাশের দেশগুলোতে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর বিশ্বের বহু দেশের বা অঞ্চলের গুরুত্ব কমে গেলেও পারস্য উপসাগরের গুরুত্ব আগের চেয়েও বেড়েছে। বিশ্ব-অর্থনীতির মূল প্রাণ-প্রবাহ হল এই উপসাগর। নাম পরিবর্তনের নীলনকশা
পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তনের ষড়যন্ত্রের সূচনা হয়েছে ব্রিটিশদের মাধ্যমে। পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের ব্রিটিশ রাজনৈতিক প্রতিনিধি রুড্রিক ওয়েন সর্ব প্রথম তার ‘পারস্য উপসাগরে স্বর্ণালী বুদবুদ' নামক বইয়ে পারস্য উপসাগরকে ‘আরব উপসাগর’ হিসেবে অভিহিত করার প্রস্তাব করেছিলেন। পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে তিন দশক ধরে ব্রিটিশ কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর তিনি স্বদেশে ফিরে ১৯৬৬ সালে পারস্য উপসাগরীয় দক্ষিণ উপকূল সম্পর্কে একটি বই লেখেন। তিনি এ বইয়ে ভুয়া ও মিথ্যা নাম ‘আরব উপসাগর’ শব্দটি ব্যবহার করেন। বেলগ্রেভ পারস্য উপসাগরীয় দক্ষিণ উপকূলকে ‘চোরদের উপকূল’ বলে উল্লেখ করেন এবং দাবি করেন যে, আরবরা পারস্য উপসাগরকে ‘আরব উপসাগর’ বলতে আগ্রহী। আর এ বইটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই আরব পত্র-পত্রিকায় পারস্য উপসাগরকে ‘আরব উপসাগর’ লেখা শুরু হয়। এর কয়েক বছর পর মধ্যপ্রাচ্যে অপর ব্রিটিশ প্রতিনিধি চার্লস বেলগ্রেভ তার বইয়ে একই বিষয়ের অবতারণা করেন। আর এভাবেই পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তনের অপচেষ্টা শুরু হয়। আরও কিছুদিন পর পারস্য উপসাগরের দক্ষিণাঞ্চলের আরব দেশগুলোর সরকারি লেখালেখিতেও ‘আরব উপসাগর’ লেখা হতে থাকে। ২০০৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত সাময়িকী ন্যাশনাল জিওগ্রাফি সবাইকে বিস্মিত করে পারস্য উপসাগরকে ‘আরব উপসাগর’ হিসেবে উল্লেখ করে। এটা সবার কাছেই স্পষ্ট ছিল যে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই কাজটি করা হয়েছে। এরপর হাজার হাজার ইরানী ন্যাশনাল জিওগ্রাফি পত্রিকার এই পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ জানায়। প্রতিবাদের মুখে পত্রিকাটি ‘আরব উপসাগর’ নামটি বাদ দেয় এবং ‘পারস্য উপসাগর’ নামটিকে ব্যবহার করে। এখানে উল্লেখ্য যে, জাতিসংঘ গত বছর পুণরায় ‘পারস্য উপসাগর’ নামটিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। পারস্য উপসাগরের পক্ষে ঐতিহাসিক দলিল-প্রমাণ মানবজাতির লিখিত ইতিহাসের প্রথম থেকেই বিশ্বের চারটি সনাক্তকৃত সাগরের মধ্যে পারস্য উপসাগর ছিল অন্যতম। গ্রীকরা মনে করত এ চারটি সাগরই উৎসারিত হয়েছে একটি মহাসাগর থেকে যে মহাসাগর বিশ্বের সব জলভাগের সমমাত্রায় বিস্তৃত। তাই এটা স্পষ্ট যে ইরানের প্রাচীন হাখামানেশীয় সম্রাট দারিুয়ুশের শিলালিপিতে "পার্স বা পারস্য সাগর" হিসেবে উল্লেখিত হওয়ার বহু বছর আগেই অ-ইরানি জনগোষ্ঠীও এই বিস্তৃত জলভাগকে পার্স নামেই চিনত। এ উপসাগরের নাম এত প্রাচীন যে অনেকে মনে করেন, পারস্য উপসাগরই মানব সভ্যতার উৎস বা লালনভূমি। এ অঞ্চলের প্রাচীন বাসিন্দারাই প্রথম জাহাজ তৈরি করেছিল। এসব জাহাজে চড়ে তারা অন্যান্য দেশে যেত। খ্রিস্টের জন্মের ৫০০ বছর আগে সম্রাট প্রথম দারিউশের শাসনামলে ইরানি নাবিকরা তাদের নৌ-অভিযান শুরু করেছিল। জেনোফেন, Ktzyas, স্ট্রাবন ও হেরোডটাসের মত খ্রিস্টপূর্ব যুগের গ্রিক ভূগোলবিদ ও ইতিহাসবিদদের বর্ণনা অনুযায়ী গ্রিকরাই প্রথম এই সাগরকে পার্স সাগর ও ইরানকে পার্স, পার্সি, পার্সিপলিস নাম দিয়েছিল। গ্রিক ভাষায় পার্সিপলিস শব্দটির অর্থ হল পারসিকদের দেশ বা বাসস্থান। দিগ্বিজয়ী সম্রাট আলেক্সান্ডারের জেনারেল Nyarkhus খ্রিস্টপূর্ব ৩২৬ সালে তার সম্রাটের নির্দেশে সিন্ধু নদ পার হয়ে মুকরান সাগর বা ওমান সাগর ও পারস্য উপসাগর জাহাজ বা নৌকাযোগে পার হয়েছিলেন। তিনি এর মোহনা পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছিলেন। ভূগোল শাস্ত্রের জনক নামে পরিচিত প্রাচীন গ্রিক ভূগোলবিদ Hecataeus খ্রিস্টপূর্ব ৪৭৫ সালে পারস্য সাগর শব্দটি ব্যবহার করেছেন। জেনোফেন ও হেরোডটাসের মতে প্রাচীন মানচিত্রগুলোতে এই সাগরকে পারস্য সাগরই বলা হত। খ্রিস্টিয় দ্বিতীয় শতকের ভূগোল ও গণিতবিদ টলেমি "বিশ্বের ভূগোল" শীর্ষক ল্যাটিন ভাষার বইয়ে অঙ্কিত মানচিত্রে পারস্য উপসাগরকে "পার্সিকুস সিনুস" বলে উল্লেখ করেছেন। খ্রিস্টিয় প্রথম শতকের রোমান ইতিহাসবিদ Kevin Tus Kurvsyus Rufus এই সাগরকে পারস্য সাগর বা পারস্য জলাধার বলে উল্লেখ করেছেন। ল্যাটিন ভাষায় লিখিত ভূগোলের প্রাচীন বইগুলোতে দক্ষিণ ইরানের জলরাশি তথা মাকরান সাগর ও পারস্য উপসাগরকে "মারেহ পার্সিকুম" বা পারস্য সাগর বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইংরেজি, জার্মান, মার্কিন, ফরাসি ও তুর্কি ভাষাসহ বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় লিখিত অভিধানগুলোতেও পারস্য উপসাগর শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। আরবী ভাষায় সবচেয়ে বিখ্যাত বিশ্বকোষ নামে খ্যাত " আলমুঞ্জেদ"ও এই সাগরকে পারস্য উপসাগর বলে উল্লেখ করেছে। ইবনে বতুতা, আবু রেইহান বিরুনি, হামাদুল্লাহ মাস্তুফি, ইয়াকুত হেমাভি ও নাসের খসরু কাবাদিয়ানিসহ প্রমুখ ঐতিহাসিক ও চিন্তাবিদও তাদের লেখায় এই উপসাগরকে পারস্য উপসাগর হিসেবে বর্ণনা করেছেন। পশ্চিমা উপনিবেশবাদীরা পারস্য উপসাগর ও ভারত উপমহাদেশে আসার পরও মানচিত্র, চিঠিপত্র ও বইয়ে এই জলপথকে পারস্য উপসাগর অথবা পারস্য সাগর হিসেবে উল্লেখ করেছে। পর্তুগাল, স্পেন, ফ্রান্স ও বৃটেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের রাষ্ট্রীয় চুক্তিনামা ও চিঠিপত্রে সব সময় পারস্য উপসাগর নামটিই উল্লেখ করতো। ১৯৬১ সালে স্বাক্ষরিত কুয়েতের স্বাধীনতা সনদেও স্পষ্টাক্ষরে পারস্য উপসাগর নামটি স্থান পেয়েছে। বর্তমানে ইরানে পারস্য উপসাগর ও এর নাম নিয়ে ৫০টিরও বেশি বই প্রকাশিত হয়েছে। ‘ঐতিহাসিক মানচিত্রগুলোতে পারস্য উপসাগর' শীর্ষক বইতে বিশ্বের সর্বজন গ্রহণযোগ্য ও বিখ্যাত ১৬০টি মানচিত্রকে প্রামাণ্য দলিল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, যেখানে স্পষ্টাক্ষরে এই উপসাগরের নাম পারস্য উপসাগর বা পার্সিয়ান গালফ লেখা রয়েছে। এতসব দলিল প্রমাণ সত্ত্বেও পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তনের প্রচেষ্টাকে বিদ্বেষপ্রসূত এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন একটি পদক্ষেপ বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। পারস্য উপসাগরের পক্ষে ইরানের প্রচারণা পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তন নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হওয়ার পর থেকেই ইরানের সরকার ও জনগণ সোচ্চার হয়ে উঠে। ইরানিদের অব্যাহত প্রতিবাদের মুখে ১৯৯৪ সালের ১৮ আগস্ট জাতিসংঘ সচিবালয় ‘উপসাগর’ লেখার পরিবর্তে ‘পারস্য উপসাগর’ লেখার জন্য সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মীদের উপদেশ দেন। কিন্তু এরপরও পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তনের অপচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ অবস্থায় ইরান সরকার ফার্সি দশই উর্দি বেহেশত মোতাবেক ৩০শে এপ্রিলকে জাতীয় পারস্য উপসাগর দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত বছর এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পারস্য উপসাগরকে ইরানের জাতীয় নিদর্শন হিসেবে নিবন্ধন করা হয়েছে। পারস্য উপসাগরে অবস্থিত ইরানি দ্বীপ কিশে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উপসাগরটিকে জাতীয় নিদর্শন হিসেবে নিবন্ধিত করা হয়। ইরানের প্রেসিডেন্ট ড: মাহমুদ আহমাদিনেজাদ ঐ অনুষ্ঠানে পারস্য উপসাগরকে আঞ্চলিক সহযোগিতা ও বন্ধুত্বের অঙ্গন হিসেবে অভিহিত করেছেন। পারস্য উপসাগরের ৮ খন্ড বিশিষ্ট সনদ সঙ্কলনের কাজও শুরু করা হয়েছে। গুগলের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে ভিন্ন শব্দ ব্যবহার অব্যাহত রাখলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন গুগলের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে হুমকি দিয়েছে ইরান। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রমিন মেহমানপারাস্ত গত ১৭ মে তেহরানে সাংবাদিকদের বলেছেন, "ইরানের শত্রুরা তেহরানের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে এবং এ কাজে গুগলকে খেলার সামগ্রী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।" তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, "পারস্য উপসাগরের প্রকৃত নামের পরিবর্তে অন্য কোন নাম ব্যবহার করলে গুগল মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।" গুগলের অনলাইন মানচিত্রে এতদিন ইরান ও আরব উপদ্বীপের মধ্যবর্তী জলরাশিকে 'পারস্য উপসাগর' হিসেবে চিহ্নিত করা ছিল। কিন্তু সম্প্রতি এ নাম থেকে ‘পারস্য' শব্দটি বাদ দেয়া হয়েছে। পারস্য উপসাগর না আরব উপসাগর? পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তন নিয়ে ইরান ও আরব দেশগুলোর মধ্যে যখন দ্বন্দ্ব চলছে ঠিক তখন ইন্টারনেটে চলছে ভোটাভুটি। http://www.persianorarabiangulf.com নামের ওয়েবসাইটে এ পর্যন্ত ৫১ লাখ ৩৯ হাজার ৪১৩টি ভোট পড়েছে। ভোটের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে পারস্য উপসাগরের পক্ষে পড়েছে ৬১.১ শতাংশ ভোট আর আরব উপসাগরের পক্ষে পড়েছে ৩৮.৮ ভাগ ভোট। অর্থাৎ এখানেও পারস্য উপসাগর নাম রাখার পক্ষেই বেশ ভোট পড়ে। ‘বিভেদ সৃষ্টিই মূল লক্ষ্য’ পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তনের ষড়যন্ত্রের প্রতিক্রিয়ায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. মাহমুদ আহমাদিনেজাদ বলেছেন, পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের অধিকাংশ দেশ যেসব সমস্যার মোকাবেলা করছে, তার পেছনে রয়েছে বিজাতীয়দের হস্তক্ষেপ,যারা গোটা অঞ্চলে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বহু দূর থেকে এখানে এসেছে। ইরানি প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের সূত্র ধরে বলতে হয়, পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তনের অপচেষ্টাও বিজাতীয়দের এ ধরনেরই একটি হস্তক্ষেপ এবং এর উদ্দেশ্য হলো, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি এবং ঐক্যের সুযোগকে সংকীর্ণ করা। #